মানুষের কর্ম ব্যস্ত জীবনে ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করে যারা একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে চান এবং পরিবার আত্নীয় স্বজন বা বন্ধু বান্ধব নিয়ে আনন্দ ঘন কিছু মজার মুহূ্র্ত উপভোগ করতে চান। তাদের জন্য এক স্বপ্নের দুনিয়া দিনাজপুরের স্বপ্নপুরী।
স্বপ্নপুরী উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমনও পিকনিক স্পট।একনান্দনিক সৌন্দার্যের বিনোদন ভুবন স্বপ্নপুরী। অপূ্র্ব এই বিনোদন কেন্দ্রটিতে ছোটবড় পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরতে আসতে পারেন। স্বপ্নপুরী দিনাজপুর শহর থেকে ৫২ কিলোমিটার দক্ষিণ নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে অবস্থিত। প্রায় ১৫০ একর জমির উপর ব্যক্তিগত গড়ে তোলা হয়েছে স্বপ্নপুরী। স্বপ্নপুরীর মায়াবী সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দেশ বিদেশের অনেক দর্শনার্থী এখানে ভীড় জমাই। আমাদের এই ব্লগে আরও অনেক তথ্য পাবেন।
প্রাকৃতিক নিস্বর্গের মাঝে বিনোদনের বিভিন্ন উপকর-ন দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়ছে স্বপ্নপুরীর স্বপ্নের ভুবন। অনেক রকম গাছগাছালি, ফুল, ফল, কৃত্রিম লেক, পাহাড় ,উদ্যান,ও সবুজের সমারহে গড়ে উঠেছে স্বপ্নপুরী। এখানে আরও রয়েছে চিড়িয়াখানা,ঘোড়াররথ, হংসরাজ সাম্পান,স্পীডবোড, শালবাগান,খোলামঞ্চ, নামাজঘর।
Table of Contents
স্বপ্নপুরী প্রবেশ মূল্যঃ
স্বপ্নপুরীর প্রবেশ পথে আপনাকে স্বাগত জানানোর জন্য পাথর দিয়ে নির্মান করা হয়ছে দুটি ধবধবে সাদা ডানা বিশিষ্ট সু-বিশাল পরী।গেট পেরিয়ে পথের দুপাশে চোখে পড়বে সারিসারা দেবদারু ও নারকেল গাছের সারি।স্বপ্নপুরীর পুরো এলাকা জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন রকম ফুল গাছ।
যেমন : গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, লিলি,গাদা-সূর্যমুখী,গ্লোবাল,কসমস ফুলসহ বিভিন্ন রকমের ঝাউগাছ ,ইপিলইপিল,ক্যাকটাস, ওইপেং,ক্রিসমাসট্রি। চারপাশে ঘনসবুজ ঘাসে ভরা বাগানে গাছের ডালে হাজারও পাখির মেলা যেটা আপনাকে মুগ্ধ করবে।
ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বপ্নপুরী পর্যটন কেন্দ্র একটি শিক্ষামূলক স্থান। এখানে তাদের জন্য রয়ছে শিশু পার্ক জীবন্ত এবং কৃত্রিম চিড়িয়াখানা। স্বপ্নপুরী বাচ্চাদের জন্য একটা দারুন জায়গা। এখানে বিনোদনের পাশাপাশি বাচ্চাদের অনেক কিছু শেখার রয়ছে।
এখানে রয়ছে কৃত্রিম পাহাড় , কৃত্রিম ঝর্ণা এবং ইট –সিমেন্টে নির্মিত বাংলাদেশের সু-বিশাল মানচিত্রের সমন্বয়ে তৈরি একটি চিড়িয়াখানা,শিশুদের জন্য দোলনা ,বায়স্কোপ, চরকিতে ঘোরার ব্যবস্থা এছাড়াও রয়ছে দেশি- বিদেশী বিভিন্ন প্রানীর ভাষ্কর্য ।স্বপ্নপুরে ঘোড়াও সুদৃশ্য ঘোড়ার গাড়িতে উঠে চড়তে পারবেন ।এখানে রয়ছে জীবন্ত পশু পাখিদের চিড়িয়াখানা। আরও আছে ট্রেনে উঠে ঘোরার সুব্যবস্থ।
স্বপ্নপুরীর লেকঃ
স্পীডবোডে চড়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন স্বপ্নপুরীর সুন্দর লেক।লেকের ঠিক উপরে তৈরি করা হয়েছে ক্যাবল কার ।সুসজ্জিত শাপলা ঘাটে পর্যটকদের গোসল করার ব্যবস্থা করা হয়ছে। স্বপ্নপুরীর ভিতর বিভিন্ন স্থানে রয়ছে বিশ্রাম করার জন্য রয়েছে ছোট ছোট ছাউনি । কৃত্রিম চিড়িয়াখানায় প্রবেশের জন্য তৈরি করা হয়ছে চোখ ধাঁধানো রাস্তা।
এর প্রবেশ পথে রয়ছে দুটি ড্রাগন যা আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবে। স্বপ্নপুরীর ভিতর দেখতে পাবেন বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাস্কর্য। এছাড়াও দেখতে পাবেনঘাড় গুজে বসে থাকা কৃষকের ভাস্কার্য। এছাড়াও কোথাও আবার দেখতে পাবেন একাকী দাড়িয়ে আছে নারী, মাথানিচু করে বসে আছে যুবক।
আপনি যদি আপনার পরিবার বন্ধুবান্ধব নিয়ে পিকনিকের আনন্দে মেতে উঠতে চান তবে এখানে সে ব্যবস্থাও রয়ছে ।এখানে সবকিছুই ভাড়ায় পাওয়া যাই। অথবা আপনি রান্না –বান্নার জন্য রয়েছে সকল সু- ব্যবস্থা।
স্বপ্নপুরী আবাসিক হোটেলঃ
এখানে থাকার জন্য রয়েছে সুন্দর সুন্দর রেস্টহাউজ ও ডাকবাংলো। আপনি ইচ্ছা করলে বন্ধুবান্ধব নিয়ে আনন্দের সাথে কয়েকটাদিন কাটিয়ে দিতে পারেন স্বপ্নপুরীতে । এখানে বিভিন্ন নামের বাংলো রয়েছে যেমন: নিশিপদ্ম, নীলপরী, সন্ধ্যাতারা, রজনীগন্ধা, মেঠোঘর এবং ভিআইপি কুঞ্জ।
এখান থেকে আপনি যেকোনটি ভাড়া নিতে পারেন। স্বপ্নপুরীর বাংলো বুকিংয়ের সুবিধা ঢাকাতেও আছে। ঠিকানা: হোটেল সফিনা , ১৫২ হাজী ওসমান গনি রোড,আলুবাজার ঢাকা । ফোন : ৯৫৫৪৬৩০-৯৫৬২১৩০
দিনাজপুর শহরে থাকার জন্য সব থেকে ভালো হোটেল হচ্ছে পর্যটন হোটেল । এছাড়াও কয়টি সাধারন মানের হোটল রয়েছে যেমন : হোটেল ডায়মন্ড ,হোটেল আল রশিদ , হোটেল নবীন , হোটেল রেহানা , নিউ হোটেল ইত্যাদি ।
যেভাবে স্বপ্নপুরী যাবেনঃ
ঢাকার গাবতলি ও কল্যানপুর থেকে নাবিলপরিবহন , হানিফ এন্টারপ্রাইজ , এস আর ট্রাভেল , কেয়া পরিবহন , এস এ পরিবহন , শ্যামলী পরিবহনের এসি ও নন-এসি দিনাজপুরগামী বাস রয়েছে । ভাড়া ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা। এরপর দিনাজপুরেরে নবাবগঞ্জ অথবা ফুলবাড়ি নেমে অটোরিকশায় করে েতে পারবেন স্বপ্নপুরীতে।